বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে লবণ পানি প্রজাতির কুমির পিলপিল ৪৪টি ডিম দিয়েছে। শুক্রবার (১২ জুন) বিকেলে কেন্দ্রের কুমির প্রকল্পের পুকুর পাড়ে এ ডিম দেয় কুমিরটি। এর আগে গত ২৯ মে অপর কুমির জুলিয়েট ৫২টি ডিম পেড়েছে।
গত তিন বছর জুলিয়েট ও পিলপিলের ডিম থেকে কোনো বাচ্চা জন্ম নেয়নি। এবার তাই রোমিও নামের বৃদ্ধ কুমিরটিকে সরিয়ে এক বছর আগে জুলিয়েট ও পিলপিরের সঙ্গে একই পুকুরে রাখা হয় আলেকজান্ডার নামে নতুন একটি প্রাপ্তবয়স্ক কুমিরকে। এবার এই কুমির প্রজনন কেন্দ্রে দুটি কুমিরের ডিম থেকেই বাচ্চা ফুটবে বলে আশা করছে বন বিভাগ।
সুন্দরবনের চাঁদপই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজাদ কবির বলেন, শুক্রবার বিকেলে কুমির প্রকল্পের পুকুর পাড়ে পিলপিল ৪৪টি ডিম পেড়েছে। এরপর ডিমগুলো সংগ্রহ করে ২১টি ডিম বাচ্চা ফোটানোর জন্য পিলপিলের ডিম পাড়ার বাসায়, ১২টি পুরাতন ইনকিউবেটরে আর ১১টি নতুন ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। আগামী ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে এ ডিমগুলো থেকে বাচ্চা ফুটবে।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বর্তমানে করমজলের কুমির প্রজনন কেন্দ্রে ছোট বড় মিলিয়ে ১৯৫টি কুমির রয়েছে। এর মধ্যে জুলিয়েট ও পিলপিল নামের দুটি নারী কুমির এবং আলেকজান্ডার নামে একটি পুরুষ কুমির দিয়ে করমজলে কুমিরের প্রজনন কার্যক্রম চলছে। গত তিন বছর পুরুষ কুমির রোমিওর সঙ্গে একটি পুকুরে জুলিয়েট ও পিলপিলকে রাখায় কোনো বাচ্চা হয়নি। এবার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিলের কাছ থেকে এক বছর আগেই রোমিওকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। জুলিয়েট ও পিলপিলের কাছে রাখা হয় আলেকজান্ডার নামে নতুন একটি যুবক কুমিরকে। সতর্কতা হিসেবে এবার নতুন-পুরাতন দুটি ইনকিউবেটরে ও পিলপিলের ডিম পাড়ার বাসায় আলাদা-আলাদা ভাবে এসব ডিম বাচ্চা ফোটানোর জন্য রাখা হয়েছে। আসা করছি এবার জুলিয়েটের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটবে।
সুন্দরবনে বিলুপ্তপ্রায় লবণ পানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন ও বংশ বিস্তারের লক্ষ্যেই ২০০০ সালে করমজলে এই কুমির প্রজনন কেন্দ্রটি চালু করে বন বিভাগ। ইতোমধ্যে প্রজনন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ৯৭টি কুমির সুন্দরবনের নদ-নদীতে অবমুক্ত করা হয়।