চিরপ্রস্থানের পথে যাত্রা করলেন জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী বাংলা গানের ‘প্লে-ব্যাক সম্রাট’ এন্ড্রু কিশোর। সোমবার ( ৬ ই জু্লাই) সন্ধ্যা ৬.৫৫ মিনিটে জন্মস্থান রাজশাহীতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলা গানের এই জাদুকর।
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর অসুস্থ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছিলেন এই নন্দিত গায়ক। সেখানে গিয়ে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে ছিলেন তিনি। চলে টানা কয়েক মাসের কেমোথেরাপি।
টানা নয় মাস সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থেকে গত ১১ জুন একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছিলেন এন্ড্রু কিশোর। তারপর থেকে রাজশাহীতে বসবাস করছিলেন তিনি।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয় দেশের জনপ্রিয় শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের। বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বাধিক ১৫ হাজার গান গাওয়া শিল্পী তিনি। বাংলা চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য তিনি আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ দেশ বিদেশে বহু সুনাম ও সন্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
এন্ড্রু কিশোরের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’
২. ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’
৩. ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’
৪. ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’
৫. ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’
৬. ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’
৭. ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’
৮. ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’
৯. ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’
১০. ‘পড়ে না চোখের পলক’
এ্যান্ড্রূ কিশোরের জন্ম ৪ নভেম্বর, ১৯৫৫ সালে রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।