অসীম ঘরামী : দাকোপের কৃতী সন্তান ড. তুহিন রায়। উপজেলার কৈলাশগঞ্জ গ্রামে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। বর্তমানে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
ড. তুহিন রায় মূলত একজন গবেষক। ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। পড়ালেখা শেষ করেই ডক্টর রায়ের চাকরি জীবন শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষকতা দিয়ে। পরবর্তীতে তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে গবেষণা সহযোগী হিসেবে যুক্ত হন।
ড. তুহিন রায়ের লেখা এ পর্যন্ত ৬টি গ্রন্থ প্রকাশতি হয়েছে। তাঁর লেখা গ্রন্থগুলোর অন্যতম “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ : ঢাকা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান।” বইটি তরুণ প্রজন্মের জন্য অনেক তথ্যভিত্তিক একটি প্রকাশনা। তাছাড়া দেশ ও বিদেশের আন্তর্জাতিক মানের জার্নালে তার ২৫টির অধিক আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে।
ড. তুহিন রায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় কলাম লিখে থাকেন। কলাম লেখার পাশাপাশি ছোট গল্প ও কবিতা লেখেন যা মানুষকে তথা তরুণদেরকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করছে। ড. তুহিন রায় একজন গুগল স্কলার। তিনি দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের সামাজিক বিজ্ঞানের কনফারেন্সে যোগদান করেন। দেশের বাইরে বিশেষত ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, শ্রীলংকা প্রভৃতি দেশে তিনি সমাজবিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন।
উল্লেখ্য, ড. তুহিন রায় ২০১৮ সালে শ্রীলংকার কলম্বোতে অনুষ্ঠিত সপ্তম ইন্টারন্যাশনাল সোশাল সায়েন্স কনফারেন্সে সামগ্রিকভাবে বেস্ট প্রেজেন্টেশন অ্যাওয়ার্ড ও সেশন বেস্ট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।
এছাড়াও এ বছরই (২০২০) তাঁর একটি গবেষণা প্রবন্ধ “Disaster risk Mitigation Strategies in the Southwestern coastal region of Bangladesh” শিরোনামে Urbanization and Regional Sustainability in South Asia বই এর চ্যাপ্টার হিসেবে Springer series, India, থেকে প্রকাশিত হয়।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী শুরু হলে তিনি এই ভাইরাসের আক্রমণের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর লেখালেখি করেছেন এবং মিডিয়াতে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।
ডক্টর তুহিন রায় একজন সংগঠক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই, খুলনা ইউনিটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার বর্তমান কর্মস্থল খূলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ড. তুহিন রায় দুই বার বিপুল ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। ডক্টর তুহিন রায়ের আর্ট অফ স্পিকিং অসাধারণ। ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশনসহ অন্যান্য সংগঠনের সাথে তিনি যুক্ত আছেন। ডক্টর তুহিন রায় দায়িত্ব পালন করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের খানজাহান আলী ও অপরাজিতা হলের সহকারী প্রভোস্ট হিসেবে।
ডক্টর তুহিন রায় একজন কবি এবং গল্পকার। বই পড়া, গান শোনা, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড তার আগ্রহের বিষয়। পৃথিবীর ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মানুষদের জীবনী তিনি পড়েন এবং তাদের সম্পর্কে জেনে, সে বিষয়গুলো ছাত্রদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেন।