কোটি কোটি টাকা মুনাফা কামাচ্ছে সনি মিউজিক ইন্ডিয়া। অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ ও বাদশার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সও বাড়ল। কী পেলেন রতন কাহার? তার নামটাও নেই।
সেই প্রশ্নই উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ২৭ মার্চ প্রকাশ হয়েছে বাদশার গাওয়া ‘গেন্দা ফুল’ শিরোনামের গান। ‘বড়লোকের বিটি লো, লম্বা লম্বা চুল, এমন মাথা বিন্ধে দিব, লাল গেন্দা ফুল’ গানটি মাত্র একদিনেই দেখেছেন ৩২ মিলিয়ন দর্শক।
এমন কোটি টাকার গানে কোথাও নেই লোকগীতি গানটির গীতিকার ও গানের মালিক রতন কাহারের নাম। এ নিয়ে শুরু হয় হৈ চৈ। ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমেও বিষয়টির কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।
অভিযোগ, বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা রতন কাহারকে কোনও কৃতিত্ব না দিয়েও বেমালুম গানটি চুরি করে নিয়েছেন বাদশাহ। ইউটিউবে গানটির বিষয় প্রথমে লেখা ছিল লিরিকস এবং সুর বাদশাহরই লেখা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার জেরে এখন সেই ডিটেলিংয়ের জায়গা বদলে হয়েছে বাংলা লোকগীতি।
গীতিকার ও গানের মূল মালিকের নাম দিলেই তো রয়্যালটির টাকা দিতে হবে। তারচে না দেয়াই ভালো। যার দিন আনতে পান্তা ফুরায়, সে তো আর স্বত্ত্বাধিকার চেয়ে আদালতে যেতে পারবে না।
এমন ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়ার পর র্যাপার কিং বাদশা রতন কাহারের সঙ্গে কথা বলতে চান। এরপরে কার্যত ভাগ্য ঘুরে গেল রতন কাহারের। বাদশা আর্থিক সাহায্য করার কথা দেন তাকে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রতন কাহারকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন তিনি। সোমবারই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে বলে জানান রতন কাহার।
বাদশাহর গানটি মুক্তি পাওয়ার পর গানটি ইউটিউবের ট্রেন্ডিংয়ে এক নম্বরে ছিল। কিন্তু প্রতিবাদের ঝড় ওঠার পর ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিংয়ে উঠে এসেছে রতন কাহারের নাম। অনেকেই এমন আছে যারা রতন কাহারের নাম জানত না। তারও এখন রতন কাহারের বিষয় খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেছে।
তাঁর ছেলে শিবনাথ কাহার জানিয়েছেন,”সোমবারই অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। খুব ভালো লাগছে যে একজন শিল্পী, আরেকজন শিল্পীকে এই সাহায্য করেছে। আমরা ওঁনার কাছে কৃতজ্ঞ। উনি অনেক বড় মনের মানুষ। উনি (বাদশা) যেটা বলেছিলেন, সেই কথা রাখলেন। টাকা পাঠানোর পর আমাদেরকে ফোন করে জানানো হয়, যে পাঠানো হয়েছে। আরও একটা ভালো বিষয়ি উনি (বাদশা) বাবার সঙ্গে একটা গান গাইবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”
রতন কাহার জানিয়েছেন,”বাদশাহ আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। ভিডিয়ো কলে আমি ওঁনার সঙ্গে কথা বলেছি। শুক্রবার রাতে ফোন করেছিলেন বাদশাহ। লকডাউন মিটে গেলে সিউড়ি এসে দেখা করবেন। আমার সঙ্গে গান গাওয়ার কথাও জানিয়েছেন। বারবার বলেন, এই লকডাউন না হলে এখনই তিনি আসতেন। আমার নাতি, নাতনি ও মেয়ের জন্য আর্থিক সাহায্য করবেন বলেছেন।”
‘গেন্দা ফুল’-এ ভিডিওর ভিউজ প্রায় ১৫০ মিলিয়ন। অর্থ পৌঁছে গেলেও গানের ভিডিওতে স্রষ্টার নাম এখনও উল্লেখ করা হয়নি।